"ডার্ক ওয়েব নিয়ে কিছু সত্যিকারের কল্পগল্প" 


  ডার্ক ওয়েব হলো বন্ডেড বা আচ্ছাদিত ওয়েব। শর্তসাপেক্ষে সাধারন মানুষ এটা ব্যবহার করতে পারলেও এক্সেস করতে নির্দিষ্ট প্রক্সি,সার্ভার,ব্রাউজার প্রয়োজন হয়। সার্ফেস নেটের ব্রাউজার দিয়ে এটার ইন্ট্রেন্স সম্ভব না।

ডার্ক ওয়েবকে গঠনকারী ডার্কনেটে থাকে ছোট ছোট ফ্রেন্ড-টু-ফ্রেন্ড, পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্ক, সেইসাথে থাকে ফ্রিনেট, আইটুপি ও টরের মতো বড় বড় নেটওয়ার্ক, এবং এসব নেটওয়ার্ক পরিচালিত হয় পাবলিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের দ্বারা।

ডার্কনেট ওয়েবসাইট গুলো শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট নেটওয়ার্ক যেমন টর "অনিয়ন রাউটার" এবং আইটুপি "অদৃশ্য ইন্টারনেট প্রজেক্ট"। 
টর ব্রাউজার এবং টর-অ্যাক্সেসযোগ্য সাইটগুলো ডার্কওয়েব ব্যবহারকারীদের দ্বারা ব্যাপক ভাবে ব্যবহারিত হয় এবং যা ".onion" ডোমেইন দ্বারা সনাক্ত করা সম্ভব।

টর ব্যবহারকারীদের অজ্ঞাতপরিচয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ প্রদানের উপর গুরুত্ব প্রদান করে এবং আইটুপি অজ্ঞাতপরিচয়ে ডার্কওয়েবে ওয়েবসাইট হোস্টিং এর উপর গুরুত্ব দেয়। দুইটির বিশেষত্ব আলাদা।
ডার্কওয়েব ব্যবহারকারীদের পরিচয় এবং অবস্থান স্তরবিশিষ্ট এনক্রিপশন সিস্টেমের কারনে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। ডার্কওয়েব এনক্রিপশন প্রযুক্তি তথ্যকে বড় সংখ্যক মাধ্যমিক সার্ভারের মধ্য দিয়ে যায়, যা ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপনের সুরক্ষা প্রদান করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় নিশ্চিতা দেয়।
প্রেরিত তথ্য শুধুমাত্র পরিকল্পনাতে একটি পরবর্তী নোডের মাধ্যমে ডিক্রিপ্ট করা যায় যা প্রস্থান নোডের দিকে যায়। একটি জটিল সিস্টেম নোড পুনর্গঠন এবং লেয়ার বাই লেয়ার মেনে চলে তথ্য ডিক্রিপ্ট করা প্রায় অসম্ভব করে তোলে।
মাথা ব্যাথা ধরিয়ে দেওয়ার মতো ব্যাপার। যদিও হাইলি কোয়ালিফাইড। প্যান্টাগন লেভেলের!

উচ্চ স্তরের এনক্রিপশনের কারনে ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীর আইপি এবং ভূঅবস্থান ট্র্যাক করতে সক্ষম হয় না এবং ব্যবহারকারীও হোস্টের ক্ষেত্রে একই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হয়। এইভাবেই ডার্কওয়েব ব্যবহারকারীদের মধ্যকার যোগাযোগ যেমন কথা বলা, ব্লগিং এবং ফাইল আদান প্রদান অত্যন্ত নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার সাথে সম্পন্ন করা হয়।

ডার্কওয়েবে হয় না এমন কিছু নেই!
আগের পোস্টে বলেছিলাম আমরা যা ব্যবহার করি বা দেখি তা সার্ফেস ওয়েব যা মাত্র ৪%! মানে ট্রেইলার। আর ডার্ক ওয়েব ধারণা করা হয় প্রায় ৯৬%! মানে পুরো পিকচার।

সাধারন প্রশ্ন আসতেই পারে যে ডার্ক ওয়েব আসলে ডার্ক কেন বা এতে কী আছে?
এর উত্তর কিছুুটা 'ডেইজিস ডেস্ট্রাকশন' পর্ব পড়ে বুঝেছেন আশা করি।

কি আছে তা প্রশ্ন না হয়ে প্রশ্নটা বরং এমন হওয়া উচিত, কী থাকে নাই ডার্ক ওয়েবে! 
জাল পাসপোর্ট চান? পেয়ে যাবেন। 
পেশাদার খুনী চান? পেয়ে যাবেন।
পাইরেটেড বই, সিডি লাগবে? 
কোনো ব্যাপারই না! 
আর দুর্ধর্ষ সব হ্যাকিং টুল তো খুবই সহজলভ্য!

নরমাল ওয়েবিংয়ে যেমন এ্যাড আসে 'অমুক নায়িকার এমন ফটো', 'তমুক গায়িকার তেমন ভিডিও' ঠিক তেমন ডার্ক ওয়েবে পাবেন 'হ্যাক টুলস অব ন্যাশনাল ওয়েবসাইট অফ এনি কান্ট্রি', 'স্প্যামস ফর রেস্ট্রিক্টেট ইমেইল একাউন্টস'। 
সত্যিও শোনছেন!

এখানেই শেষ নয়, যেকোন ধরণের ড্রাগস চলবে? আছে! 
মানসিক রোগী কিছু পশুদের জন্য সব থেকে লোভনীয় বিষয় খুন, টর্চার, রেপ, এনিমেল কিলিং এগুলোর সবই আছে।

যারা স্ট্রীপড,বন্ডেজ,এক্সট্রিম (১৮+) এ ধরনের ভিডিও সম্পর্কে জানেন তারা ভাবুন, এ ধনের ভিডিও অনায়াসে লাইভ দেখানো হয়। যদিও টাকার অঙ্কটা মোটা থাকে।

এগুলো হলো পানির নিচ,গভীরে চলুন।

রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক, অস্ত্র বেচাকেনা, এসবও ডার্ক ওয়েবে আছে। এটাই সবথেকে স্পেশাল পার্ট ধরা হয়।

তবে আপনি এসব খুব সহজে করে নিবেন তা নয়! 
একটু অসাধারন পথে পা রাখলেই আপনার উপর নজরদারী শুরু হয়ে হাজার জনের। উল্টাপাল্টা করলেই বিপাকে পড়ে যাবেন।আর ডার্ক ওয়েবে ফেঁসে যাওয়া মানেই খেল খতম!

খুব সহজ কথায় বলতে গেলে 'ডার্ক ওয়েব' অত্যন্ত জটিল আর বিপদজনক একটা জাল।

সৌজন্যেঃ Ridwan Ur Rahman