Horror
ভুতুড়ে বাগান বাড়ি পর্ব - ২
সকালে নাস্তার টেবিল এসে বিষন্ন অবস্থায় পেল জামাল সাহেব কে ।
উনাকে শান্তনা দিতে জিশান বলে উঠল দেখুন আংকেল যা হবার হয়ে গেছে কিন্তু তার বিনিময়ে আমরা একটা ক্লু তো জানতে পারছি যে এটা কোন ভুতের কাজ নয় । আর যাই হোক ভুত তো আর চিঠি লিখতে যাবে না ।
তাহলে কেইস টা পুলিশের হাতে দিয়ে দিন উনিই বের করবেন বলল জামাল সাহেবের স্ত্রী রাবেয়া ।
পুলিশ তো একটা জামেলাই আছেই মৃত ব্যাক্তির মৃত্যুর রহস্য যে ওদেরই বের করতে হবে দেখি এর মাঝে যদি আমরা কোন সমাধান পাই বলল জিশান।
কাগজটা হাতে নিয়ে ভাবতে লাগল জিশান । কি করা যায় কোন ক্লুই তো মিলাতে পারছে না।
হঠাৎ তার চোখ গেল কাগজ টার ডান কোনাতে। কম্পিউটার দোকানের নামটা কাগজের কোনায় লেখাই আছে ।
নিজের আজান্তেই বলে পেলল অপরাধী যত বড়ই চালাক হোক একটা না একটা চিহ্ন রেখেই যায়।
জিশানের মুখে এই কথা শুনেই দাঁড়িয়ে গেল নাফিস আর হৃদয় ।
সমস্যার একটা কুল নিশ্চয় পেয়েছিস বলল নাফিস। হুম বলেই হাতে কাগজ টা নাফিসের দিকে এগিয়ে দিয়ে রেডি হতে বলল ওদের।
পুরো বাজার তন্য তন্য করে খুজে ও দোকানটা খুজে পেল না ওরা জামাল সাহেবর কাছে গেলে তিনিও কোন ঠিকানা দিতে পারলেন না ।
হৃদয়ের কাছে সব শুনে কাগজটা নিল মুনা ।
নিজের ল্যাপটপ অন করেই মুখ কাল করে পেলল সে। দোকান টার সন্ধান পেয়েছে গুগল ম্যাপে কিন্তু তা তো ঢাকায়।
অবাক হল সবাই । ঘঠনা এখানের আর লেখাটা লিখানো হয়েছে ঢাকা থেকে বড়ই অদ্ভুত লাগছে এই কেইস টা বলল রাফি ।
যতই অদ্ভুত হোক আমাদের কে এখন ঢাকায় যেতে হচ্ছে ।
কাগজটা নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেন দরল নাফিস আর জিশান ।
পরের দিন ঢাকাতে গিয়েই খুজে বের করল দোকান টা।
বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে দোকানটা খুজে পেতে কোন অসুবিধে হয়নি ওদের ।।
দোকানে গিয়েই অবাক হয়ে গেল ওরা কারন এই মাত্র দোকান থেকে যে বের হল সে আর কেউ নয় জামশেদ সাহেব ই।
এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি বলল জিশান।।
জামশেদ সাহেব কে লক্ষে রেখে হাটছে ওরা ।
একটা তিনতলা বিল্ডিং এ এসে উপরে উটতে লাগল। দোতলার ৩১ নাম্বার রুমটায় ডুকে গেল জামশেদ সাহেব ।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে।
কম্পিউটার দোকানটায় গিয়ে দাড়াল ওরা ।
হাতে সময় কম তাই সোজা বলে দিল এক ঘন্টা আগে যে লোকটি আপনার দোকানে এসেছিল সে কি টাইপিং করিয়েছে?
কোন লোক..? আর আপনারা কারা? আপনাদের প্রশ্মের উত্তর দিতে আমি বাধ্য নয় ।বলল দোকানদার লোকটি ।
আপনাকে কি বাধ্য করাতে বলছেন রেগে গিয়ে বলল নাফিস ।
বাইরে গিয়ে ইন্সপেক্টর ফারহান সাহেব কে ফোন দিল জিশান ।
মামা আপনার সাহায্য খুবই ধরকার।
আমি তো অনেক দূর আছি, তোমরা কোথায়..? বলল ইন্সপেক্টর ফারহান।
ঢাকায় এসে বিপদে পড়েছি । আপনি আসতে আসতে অনেক দেরি হবে তার চেয়ে আপনি ঢাকার পুলিসস্টেশনে ফোন দিয়ে আমাদের কথা বলে ।
দোকানের নাম বলতে ভুলল না জিশান।
আচ্ছা বলে ফোন রেখে দিল ফারহান সাহেব।
জিশানদের এলাকার একজন সৎ পুলিশ অফিসার।
পনের মিনিট পর পাচজন পুলিশ এসে হাজির হল।
আমিই জিশান ।
কিছুই করার নেই বেচারা দোকানীর ।
কম্পিউটারের স্কিনে চোখ পরতেই তাড়াতাড়ি মুনা কে ফোন দিল জিশান তোরা সবাই ঠিক আছোস তো..?
ওপাশ থেকে কথার ধরন বুঝেই জিশান আতংকে উঠল।
সন্ধায় হৃদয় বাংলোতে গিয়েছিল এখনো পিরে আসে নি বলল মুনা।
কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে রাখল জিশান ।
অপেক্ষা কর কিছুক্ষনের মধ্যে একটা চিঠি পাবি যাতে লেখা থাকবে "
একজন কে নিয়ে গেলাম যদি তোমার ঐ গোয়েন্দা বাহিনী এখান থেকে না জায় তাহলে বাকি গুলো কেও হারাবে"।
আর শুন তোরা কোথায় যাওয়াত দরকার নেই বাসাই বসে থাক এমন কি জামাল সাহেব কেও বাইরে যেতে নিষেধ করল জিশান।
পুলিশ সব শুনে দোকানিকে নিয়ে গেল থানায় প্রয়োজন হলেই পাটিয়ে দিবে জামাল সাগেবের ঠিকানা দিয়ে দুই জন পুলিশ নিয়ে জামশেদ সাহেবের উদ্দেশ্যে গেল ওরা কিন্থ ৩১ নাম্বার রুমটি বন্ধ পেল ।
পুলিসস্টেশনের নাম্বার নিয়ে রাতেই রওনা দিল দুজন....
ট্রেন থেকে নেমে একটা গাড়ি নিয়ে বাংলোর সামনে গিয়ে থামল রাত তখন তিনটা।
গাড়িওয়ালার বাড়া চুকিয়ে দিয়ে ভিতরে ডুকল ওরা দুজন ।
গাড়িওয়ালা নিশ্চয় এই এলাকার নয় নইলে এত রাতে এখানে আসত না হাজার টাকার বিনিময়েও বলল নাফিস ।
ঠিক বলেছিস তুই কিন্তু এখন একটু সাবধান হো ।
আশা করি এত রাতে কেউ ভুতের ভয় দেখাবে না কিন্তু
ফাদ পেতে রাখতে তো পারে ।
এমন সময় মুনার ফোন পেয়ে একটু অবাক হলই দুজন ।
তোর কথা ঠিক প্রমান করে দিয়ে গেল একটু আগে কিন্তু
দুর্ভাগ্য বসত আমরা লোকটাকে দরতে পারে নি। বলল মুনা ।
তোদের দরতে হবে না এক্ষুনি ঘরে ডুক চিৎকার দিয়ে বলে উঠল জিশান ।
তখনই হঠাৎ মিউজিক শুরু হয়ে গেল।
শব্দটা অনুসরন করতে লাগল জিশান কিন্তু মিউজিক যে মাটির নিচ থেকেই আসছে ।
এমন সময় কিছু দূরে সাদা কিছু একটা দৌড়ে চলে গেল।
কিছুক্ষন পর আউউউ করে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পরে গেল নাফিস......
দৌড়ে নাফিসে কাছে গেল জিশান । মাথায় আগাত লেগেছে ।
পকেট থেকে ফোন বের করে মুনা কে ফোন দিতে যাবে এমন সময় ইটের স্তুপের পাশ থেকে কেউ একজন দৌড় দিল । কিছু বুঝে উঠার আগে জিশানও ছুটল লোকটির পিছন পিছন ।
কিন্তু হঠাৎ গাছের শিকড়ের সাথে হোছড় খেয়ে পরে গেল সে । উঠে দাঁড়িয়ে লোকটিকে আর দেখা গেল না।
নাফিস কে নিয়ে জামাল সাহেবের বাড়িতে পিরল ।
পরদিন সকাল.....
এখনো কারো ঘুম ভাঙে নি ।
ইন্সপেক্টর ফারহান সাহেব কে ফোন দিল জিশান ।
আজকেই এখানে আসতে হবে বলে দিল।।
নাফিসের আগাতটা বেশি নয়, তবুও রেষ্ট নেওয়া দরকার ।
সকাল সকাল বেরিয়ে পরল জিশান ।
কাল রাতে যেখান থেকে লোকটিকে হাতের নাগালের বাইরে করেছিল সেখানে এসে থেমে গেল ও
।
পিছন থেকে কেউ একজন ওর মুখ চেপে ধরেছে ।
হাতটা গুরিয়ে সোজা লোকটির বুড়ির উপর ড্রাইভ করতে যাবে কিন্তু তার আগেই ধাক্কা দিয়ে নিচের গর্ততে ফেলে দিল ওকে ।
চোখ বন্ধ করে চিৎকার দিতে যাবে এমন সময় থেমে গেল সে।
যা ভেবে ছিল তা তো হয় নি ।
একবারে সুস্থদেহে নিচে পড়ে আছে ও ।
দুটো লোক এসে হাত পা বেধে একটা অন্ধকার রুমে নিয়ে আসল জিশান কে ।
রুমটা অন্ধকার বসে আছে জিশান কিন্তু একা নয় তার পাশে হাত পা বাধা অবস্থায় হৃদয় ও রয়েছে ।
লোকগুলো নিশ্চয় এতক্ষনে চলে গেছে ।
মশারাও আজ খেপেছে,মনে হয় কত কালের শত্রুতা ওদের সাথে সব রক্ত চুষে নিবে যেন ।
যে ছেলে দুটি তোর হাত লা বেধে ছিল তাদের নাম রফিক ও কামাল অসহায় ভঙ্গিতে বলল হৃদয়।
তুই কি করে জানলি বল জিশান ।
ওদের কথা বার্তা শুনে বুঝলাম।এখানে এভাবে বসে থাকলে মশার কামড়েই মারা যাব । এই জাহান্নাম থেকে হতে হবে নাকি ।
ওদিকে
তন্য তন্য করে খোজা হচ্ছে জিশান আর হৃদয় কে। ফারহান সাহেব এসে গেছে ।
জামশেদ মিয়া কে পাওয়া যাচ্ছে না এলাকায় ।
দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে নাফিস ।
আমার পিছনে গিয়ে পকেট থেকে ছুরিটা বের কর বলল জিশান।।
একেতো নিজের হাত বাধা তার উপর আবার পিছনের দিকে তাই অনেক কষ্টে ছুরিটা বের করে সাবধানে বাধন টা কেটে দিল হৃদয় ।
দুজনেই উঠে দাড়াল ।
একসাথে সামনের দিকে পা বাড়াল ।
নাফিস কে একটা ফোন কর বলল হৃদয়।
এখান থেকে বের হয়ে করা**************
কথা শেষ হওয়ার আগেই কেউ বলে উঠল "কিন্তু সেই সুযোগ তোমাদের কে দিচ্ছি না"
বলেই দুটি মাঝ বয়সের ছেলে ছুটে এল ওদের দিকে।
বামদিকে গুরে নিজেকে দরতে আসা লোকটির পেটে ঘুসি টা বসিয়ে দিল জিশান ।
হৃদয় ঘুসি মারতে ব্যার্থ হলেও আত্বরক্ষা করতে পেরেছে ফলে লোকটি গিয়ে পড়ল পাশে রাখা মাটির স্তুপের উপর ।
আরো কয়েকটা ঘুসি বসিয়ে দুজনের হাত পা বেধে নাফিস কে ফোন দিল জিশান।
ওদের কে বাংলোতে আসতে বলে গর্তের মুখ খুজতে লাগলল ওরা ।
দু'জন বেরিয়ে এল গর্ত থেকে ।
ফারহান সাহেব কে দেখে খুশি হল জিশান।
লোক দুটো কে নিয়ে জামাল সাহেবের বাড়িতে গেল ওরা ।
রয়ে গেল শুধু জিশান।।
গর্তটার ভিতরে আবার ডুকল সে ।
উঠে আসার সময় পায়ের নিচে মাটির বদলে শক্ত কিছু লক্ষ করেছিল সে সবাই থাকায় এই বিষয়ে কিছু বলে নি সে ।
(চলবে)
Follow Us